বড় মেঘ জমেছে

আজ বড় মেঘ জমেছে
আমার গ্লাসের গলা বেয়ে
লাল ওয়াইনের স্তর –
লাল ওয়াইনের মেঘ – ঢলে আসে ৷
….. আজ বড় মেঘ জমেছে ৷৷

আজ সারাটা দিন শুধু তুষারের মতো সাদা –
নরম ঘাসের মতো পেলব –
ওয়াইনের ঢল নেমেছে ৷৷

আজ বড় ভোর জমেছে
ভিজে শিশিরের চিক্কন জালি
পাতায় পাতায় সবুজের গন্ধ
আড় ভাঙা সূর্যের হাই
আর পদ্মের লাজুক চাহনি ৷
আজ বড় ভোর জমেছ ৷৷

In PDF View

Or

Baro Megh Jamechhe

কথা ছিল কাল সারারাত

কথা ছিল কাল সারারাত
এক মাতাল করা ঝোড়ো জ্যোৎস্না
আমার কড়িকাঠ বেয়ে নেমে আসা
ঈষৎ পান্ডুর মেঘ ঝরা সন্ধ্যা
…….আর সেই কোন ছেলেবেলার ভেসে আসা
কত শত মুখ দেউড়ির খিড়কি দিয়ে
অনেক মুখের থেকে মুখ ধার করে –
ভোরের আলোয় লাল হয়ে যাবে ৷
অনেক মুখের থেকে মুখ
ঠিক মানুষের মুখের মত মুখ –

রাত্রির শরীরে মুখ লুকিয়ে অনেক কেঁদেছি আমি ৷৷

অনেক রাত অবধি শুধু শীতল হাওয়া
শিরশিরে ঠান্ডা হাওয়া….
অনেক কেঁদেছি আমি
তারপর….
ঘুমিয়ে গেছি কখন ৷৷

অদ্ভুত সুন্দর এক ভোর, রমণীর মুখের মত
কখন সে ঠান্ডা বাতাস হয়ে গেছে বসন্ত….. ৷৷
তোমার লাল ফোঁটার মত ভোরে –
আমি আজও খুঁজে ফিরি ……

অনেক মুখের থেকে মুখ
ঠিক মানুষের মুখের মত মুখ ৷৷

In PDF View

Or

Katha Chhilo Kal Sararat

কোমা – মমি

পৃথিবীর সব আলো নিভে গেলে –
ধুসর পান্ডুর চোখ করে আয়োজন
জনান্তিকে কালরাত্রি –
পাতায় পাতায় হিস্ হিস্ শব্দ ৷৷
তবু মৃত্যু ছেড়ে মরতে চাই না বড় …
ধ্বংসস্তুপে কোমার মত ৷৷
পিরামিড কর’ আয়োজন –
রক্তলেখা লিখে যাব’ আমি
মিঠেপানি নদীটির তীরে ৷৷
জমাট রক্তের মত
একদিন বেঁচেছিলে যখন
জীবনের ক্লেদাক্তও লাল হয়ে যেত ৷৷
কোনোদিন আর ঘুম ভাঙবে না জেনে
সেই ক্লেদাক্ত পাললিক মমি
                        রক্তলেখায় …..
            লিখে যাব আমি ৷৷
Or

ধৃষ্টতার হাতুড়ি

এক ছটাক মদ নিয়ে
মাতলামির অন্ত নেই আমার…..
ভাবি কয়েক হাজার বছর ধরে
একতাল কাদা, বার্নিশ
হাতে মুখে ঠোঁটে ঘষে
অবশেষে পাথুরে প্রতিমা ,
…..    এটাই সত্যি ৷

নায়েগ্রার মুখের মতো ধোঁয়াশা,
হিমালয়ের বুকের মতো – বিচূর্ণ
অথবা ব্যারেনের অগ্নিগর্ভ
হৃদয় থেকে তুলে আনা
একতাল উত্তপ্ত লাভা ৷
আমি নাভিতে যোনিতে চুমু দিয়ে দেখি
রাত শেষ হয়ে গেছে –
ভোরের ঝিমুনিটুকু বাকি ৷

সকালে চোখ ঘষে বুঝি
নিজের সত্তা নিয়েই
ধৃষ্টতার অন্ত নেই আমার ৷

In PDF View

Or

dhristatar haturi

তার চেয়ে বরং …………….

তার চেয়ে বরং কোনো কবিতা শোন –
সারাদিন পাড় ভাঙ্গা,
তুরতুরি নদীটির ফেনিল জিহ্বার মতো
এক ঝাঁক বলাকার –
নিরিবিলি আনাগোনা ৷৷

অথবা মিশরীয় সভ্যতায়
মৃত শবরীর ন্যায় –
নিরন্তর ভয় ধরা মমির স্তুপের মতো,
এক ঝাঁক কাব্যিক হৃদয় ৷৷

তার চেয়ে বরং একটু ঘুরে আসি,
নিল ডানার পরীর দেশে –
লাল পিয়ালী সবুজ হাসি  ৷৷

তার চেয়ে বরং অনেক দিনের আলিস্যি ভেজা –
একরাশ হাই তুলি  ৷৷

In PDF View

Or

Tar chye barang

যে নক্ষত্রও সব

আমার সব দুঃখ, সব স্বপ্ন মুক্ত হয় না কেন ?
আমার সব স্মৃতি সব বেদনা ঝিনুক হয় না কেন ?
আমার সব চেতনা, সব তিতিক্ষা সাগর হয় না কেন –
সব প্রেম সব মাধুরী আকাশ হয় না কেন….
আমার সব ব্যর্থতা সব হতাশা মেঘ হয় না কেন ??
            সব অনুরাগ সব আকাঙ্খা বাতাস হয় না কেন ৷
আমার সমস্ত আকাশ জুড়ে যে ছোট্ট তারা
আর জোনাকির রঙ ধরা নক্ষত্রও সব
ভোরের আবির হয় না কেন ?
                        কখনও বা ভোরের জোয়ার
ভাসিয়ে নিয়ে যায় নি কেন – সে পদ্ম কুঁড়ির
                                    নরম লজ্জা ….
আমার ভোরের পাখিরা সব
ঘর ভাঙা ঝড় থেমে গেলে লাল শিউলি …..
                        অথবা বকুল গন্ধ চুরি করে না কেন ?
যতই সমস্ত আকাশ জুড়ে
মেঘ বলাকার ছবি আঁকি না কেন
তবু আমার সব আঁচড় ঘিরে
            কবিতা হয় না কেন ??
Or

হারিয়ে যাওয়ার ঠিকানা

আজও ……………
সেই কয়েক সহস্র যুগের বিবর্ণ পথ’ছবি
আবালবৃদ্ধবনিতার ভিড়ে
এলোমেলো তুলির টানে
নিষ্ঠুর চাহিদার মতো নির্মম মায়াবী ৷৷

অনেক যুগের পরে আজ ভোর জেগেছে অনেক পরে
কুয়াশায় ভেসে আসা স্বপ্নের ঘোরে
তবু তো ভোর জেগেছে অনেক পরে  !!

মেঠোপথে কত এলোমেলো ঢেউ টানা
কত এলোমেলো গন্তব্য
ঝড়ো হাওয়ায়
সহস্রগুন বাঁধনের নিষ্ঠুর বন্ধন
তবু হারিয়ে যাওয়ার অজস্র ঠিকানা ৷৷

এই শেষ চলা –
কখনও আর ফিরব না ৷
তবু দুহাতে দুমুঠো ফুল ছাড়ায়ে দিলাম ৷
যদি …..
অসতর্ক মুহুর্তে কোনো
চেয়ে দেখো …..
আমার
হারিয়ে যাওয়ার ঠিকানা ৷৷

In PDF View

Or

Hariye jaoar thikana

স্ব-মৈথুন

[এই কবিতাটি লেখার আগে আমি আমার আজকের একটা অনুভূতি share করতে চাই।

আজ বিকালে প্রচন্ড কালবৈশাখী মেঘে অনেক প্রতিচ্ছবি দেখেছি । হ্যাঁ, তোমাকেও দেখেছি সেখানে। অনেক অনাবশ্যক রুপকের অন্তরালে যেমন আমি হারিয়ে যাই, তেমনি আমিও অনেক সৃষ্টির মাঝে তোমার সত্বা রেখে গেলাম আগামীর কোলে। শুধু এক তোমাকেই নয়……. অনেক আমার মাঝে। ]

খুব দুরের কোনো আমিকে নয়
খুব কাছের কোনো আমাকেই করে ভয় ।

খুব সাদামাঠা তোমাকে নয়
এক রুপসী  –  তোমাকেই করে ভয় ।

কালবোশেখীর প্রচন্ড হাওয়া
মেঘ বাদলের মেদুর মৈথুনে
তোমায় …….
আমি বৃষ্টি বলেই ডাকব ।।
সেই সদ্যোজাত বৃষ্টি জন্মায় ।।

এক আমাকে নয় –
মাঝে মাঝে তোমাকেও করে ভয় ।

এক বাদলের নয়
মাত্র এক শ্রাবনের নয়
এক প্লেটনিক প্রেমের সমুদ্র –

সেই বৃষ্টিরা সব জন্মায় –
শুধু এক তোমাতে নয় ।।

In PDF View

Or

swa-maithun

চক্রান্ত

এই চক্রান্তে তোমায় আমি ব্যর্থ হতে দেব’ না
কত বার মরেছ’ তুমি – কত দিন – কত রাত
কত নিশিথে – একলা ছাদে –
কত তারায় তারায় – অথবা ঢেউ গোনায় ।
কত বার মরেছ তুমি ??
কখনো চুপিসারে –
তোমার চোখে, ঠোঁটে, চিবুকে দেখেছি
দেখেছি হাসির মতো দুলে দুলে হেঁটে চলে গেছে
এক নেশার মতো  – পাপড়ির রং ধরা
ভোরের আলোয় নববধুর মতো পদ্মকুঁড়ির ভ্রুকুটিতে ।
জানো, প্রতি সূর্যাস্তে মৃত্যু আসত’ আমার
                    জনান্তিকে –
………….এ যাবৎ শুধু রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত আমি
আর মৃত্যু আসে না  – ।
মরণ সুখের মহামরণ হয়েছে আজ ।
এই চক্রান্তে তোমায় আমি সামিল হতে দেব না ।
or

আজ সারারাত – ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি

অঝোর ধারা বৃষ্টি গোনা
     সন্ধ্যা আর আমি
মাঝখানেতে তিতির সোনা
     প্রাণ গিয়েছে থামি ৷৷
ওপারেতে মুক্ত আকাশ
     মেঘের আনাগোনা
এ-পারেতে মিটিমিটি
     উষ্ণ আদর ছোঁয়া,
ওপারেতে কান্না ভেজা
     বৃষ্টি মাদল গাওয়া ৷৷
এ-পারেতে মন খারাপি
     সিক্ত আগল খোলা
ওপারেতে বৃষ্টি ফোঁটায়
     বকুল গাঁথা মালা ৷৷
এ-পারেতে রাজপ্রাসাদী
     চুমকি জরি শাড়ী
রাত পোহালেই উড়ে যেও
     দূর সুদূরের পাড়ি ৷৷
শুধু আজ সারারাত তুমি আমি
     ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি
শ্রাবন শেষে তিতির সোনা
     কবিতায় অনাসৃষ্টি ৷৷
Or