সানুনয় নিবেদন (হাসান ইমতি)

ক্ষুধিত ইচ্ছেময় পুরুষ-গন্ধি রাতের বুক পকেটের
অনৈতিক ভাজে রাখা কাম-ভেজা কোন শরীরময়
বোধের সাথে আমার আর হয়না নির্ঘুম সহবাস …
স্পর্ধিত বিশ্বাসের উর্বশী পাখায় লোলুপ আগুন
জ্বেলে পুড়িয়ে ফেলেছি আমার সব সুখস্বপ্ন …

 

Read full post..

সানুনয় নিবেদন (হাসান ইমতি)

অনির্বাণ কোমায় আচ্ছন্ন

অনির্বাণ কোমায় আচ্ছন্ন

প্রত্যুষ আফসোস করেছিল

বলেছিল – কোনো এক অজ্ঞাত পিরামিডের কফিনে

শুধু হৃদপিণ্ডটুকু জ্যান্ত মমির মতো

…………………… আজও বেঁচে আছে ।

আমি সোল্লাসে চিৎকার করে বলেছিলাম

শাবাশ – …. অনির্বাণ শাবাশ |

অনির্বাণ কোমায় আচ্ছন্ন –

মৃত্যুর প্রহর গুনছে ।

কিন্তু …………….

অনেক রাত্রি আত্মস্থ হতে চেয়েছিল অনির্বাণ ।

নিটোল সংজ্ঞাহীন সমাধি ।

সৃষ্টির উন্মত্ত সুখ, উষ্ণ আলিঙ্গন

আর চেয়েছিল নীল আবিরের মত সমুদ্র

মিশরের বুকে আর এক নীল কবিতা লিখবে সে ।

অনির্বাণ চেয়েছিল কিছু সবুজ আফ্রিকা থেকে কুড়িয়ে

সাহারার ধুসর খোঁপায় পরিয়ে দিতে

…………………… পারে নি ।

সময় তার কাছে কোন রাজপথ নয় ।।

সামান্য ভাঙা চোরা সঙ্কীর্ণ গলিপথ ।।

তাই সে ক্লান্ত প্রতীক্ষায় শুধু প্রহর গুনছে ।।

অনির্বাণ মৃত্যুর প্রহর গুনছে

তাই …………….

এখন অন্যখাতে হিসাব মেলাতে ব্যস্ত ।

কালি ঝুলি আর পোড়া ফ্যান মাখা হাঁড়িটা –

আর শিশু হাতে তুলে আনা গুটি কয় ভাতের কণা …….

আমরা আগলে নিয়ে বসে আছি

বছর থেকে আলোকবর্ষ ধরে

…………………… অনির্বাণ ফিরে আসবে ।।

আজ আমি দেখতে পাচ্ছি

সময় অনির্বাণের কপালে চুমু দিয়ে বসে আছে ……

বসে আছে আর নিষ্প্রাণ আঙুলগুলো

অন্যমনস্কভাবে গুনে যাচ্ছে –

এক দুই …………………… দশ ।

আসলে দশটা আঙুল দিয়ে অনেক সংখ্যা হয় ।

…………………… শাবাশ অনির্বাণ শাবাশ ।।

In PDF View

Or

Anirban

আর কখনো ডাকব না

ভাবি ……
তোমায় আর আঁকব’ না
বর্ণে ছন্দে এভাবে আর ডাকব না
ভাবব না আর ……
তোমায় আমি ভাবব না ।।
নিশিথ শেষে পরীর মতো
জানি কখনো আসবে না
দিলাম ছুটি
তোমায় আমি
ডাকব না ……
আর কখনো ডাকব না ।।

কখনো যদি দু চোখ জুড়ে
ভিজিয়ে পাতা এমনি করে
আমার মতো তুমিও কাঁদো ।।
নাই বা দিলে আমায় তুমি
সেই দু ফোঁটা  অশ্রু বিন্দু,
জানব তুমি আমারি ছিলে
সেই স্মৃতিরই নরম কোলে
ঘুমাও সোনা – আর কেঁদো না ||

আমি ওগো ফিরব না ……
আর কখনো ফিরব না ।।

In PDF View

Or

Ar Kakhano Dakbo Na

হয়তো কোনো সন্ধ্যা

নরম সন্ধ্যার লাজুক গালে আলতো চুমু
কাশফুল ছিঁড়ে দেওয়া মৃদু শৃঙ্গার
আর…..
বৃষ্টির বলি রেখার বিনুনি ৷
সন্ধ্যা লজ্জায় সবুজ হয়ে ওঠে ৷
সে সন্ধ্যা তখন গলতে সুরু করেছে,
আর একটু পরে –
মিশে যাবে রাত্রির উষ্ণ শরীরে ৷
রাত্রির শরীর থেকে যাবে বীজ হয়ে
দিনের অন্তরে ৷৷

কাল সে বীজ জন্ম দেবে
আর এক নতুন সন্ধ্যার ….
ঠিক আজ যখন সন্ধ্যা নামে ৷

সন্ধ্যা নামে দিন শেষ হয় বলে
সন্ধ্যা নামে রাত শুরু হয় বলে
সব কাজ শেষ হলে সন্ধ্যা নামে৷
এখন শুধু দুরন্ত রাত্রির অবসর
সব ভুলে থাকা ৷

ভয় হয় ……..
আমার সন্ধ্যা কোনো দিন হয়তো
ভুলে যাবে আমায় নিতে,
আমার গ্রাম – আমার শহর –
ভুলে যাবে ৷

হয়তো কোনো সন্ধ্যা ভুলে যাবে আমায় ……..

In PDF View

Or

hayto kono sandhya

ককটেল আরো এক ঢোক

ককটেল – আরো এক ঢোক ৷৷
কাল থেমেছিল চৌষট্টিতে
আজ কত হয় কে জানে ৷
ককটেল – আরো এক ঢোক ৷৷
ধ্যানের প্রাসাদ ঠেলে দেখি
তোমার নিস্পলক দুটি চোখ,
অবোধ বালকের কোনো
          লেথ্থি ছাড়া লাট্টুর মতো
           বনবন ঘোরে……..
           তবু যেন স্থির,
যেন – কতো কথা বলে
           নিদারুন গম্ভীর ৷৷
ককটেল আরো এক ঢোক ৷৷
তবু তো মাতাল করে না,
তোমার হাসির মতো !
চোরা পথে, আধখানা ঢাকা –
জ্যোৎস্নার মতো ৷৷
মানসী তুমি হাসো না …….
আর একটু মাতাল হই ৷৷
ককটেল – আরো এক ঢোক ৷৷
মৃদুস্বরে আধো আধো ডাক
প্রেম … ধরা ধরা ডাক
গুমে গুমে কাঠ……
কালো ছায়ে ঢাকা
লাল নয়, তবু –
গনগনে তাতা ৷
           আমাকে কেন
           ততটা মাতাল করে না ?!
দু-আঁচল সময় আরো
           ভিক্ষে চাই,
           যদি পাই –
আরো দুটি মূহূর্ত্ত ঘিরে
ততটা মাতাল করে –
           আমায় আবার ৷৷
ককটেল আরো এক ঢোক
দুরে …… আরো দুরে ….
তার নুপুর শুনি,
তুমি কি আসছ’ মনি..
এই বারে বসে – আরো কত বার
ঘুমিয়ে গেছি – অনেক আগেই
           তোমার আসার ৷৷
ঝমঝমে থমথমে আরো কত দুর
এখুনি বিকেল এলো এড়িয়ে দুপুর ৷
ককটেল আরো এক ঢোক
তুমি আসছো মনি,
তুমি আসবে জানি
           আজ জাগি –
ককটেল – আরও এক ঢোক …
ককটেল – আরও এক ঢোক ৷
or

বড় মেঘ জমেছে

আজ বড় মেঘ জমেছে
আমার গ্লাসের গলা বেয়ে
লাল ওয়াইনের স্তর –
লাল ওয়াইনের মেঘ – ঢলে আসে ৷
….. আজ বড় মেঘ জমেছে ৷৷

আজ সারাটা দিন শুধু তুষারের মতো সাদা –
নরম ঘাসের মতো পেলব –
ওয়াইনের ঢল নেমেছে ৷৷

আজ বড় ভোর জমেছে
ভিজে শিশিরের চিক্কন জালি
পাতায় পাতায় সবুজের গন্ধ
আড় ভাঙা সূর্যের হাই
আর পদ্মের লাজুক চাহনি ৷
আজ বড় ভোর জমেছ ৷৷

In PDF View

Or

Baro Megh Jamechhe

কথা ছিল কাল সারারাত

কথা ছিল কাল সারারাত
এক মাতাল করা ঝোড়ো জ্যোৎস্না
আমার কড়িকাঠ বেয়ে নেমে আসা
ঈষৎ পান্ডুর মেঘ ঝরা সন্ধ্যা
…….আর সেই কোন ছেলেবেলার ভেসে আসা
কত শত মুখ দেউড়ির খিড়কি দিয়ে
অনেক মুখের থেকে মুখ ধার করে –
ভোরের আলোয় লাল হয়ে যাবে ৷
অনেক মুখের থেকে মুখ
ঠিক মানুষের মুখের মত মুখ –

রাত্রির শরীরে মুখ লুকিয়ে অনেক কেঁদেছি আমি ৷৷

অনেক রাত অবধি শুধু শীতল হাওয়া
শিরশিরে ঠান্ডা হাওয়া….
অনেক কেঁদেছি আমি
তারপর….
ঘুমিয়ে গেছি কখন ৷৷

অদ্ভুত সুন্দর এক ভোর, রমণীর মুখের মত
কখন সে ঠান্ডা বাতাস হয়ে গেছে বসন্ত….. ৷৷
তোমার লাল ফোঁটার মত ভোরে –
আমি আজও খুঁজে ফিরি ……

অনেক মুখের থেকে মুখ
ঠিক মানুষের মুখের মত মুখ ৷৷

In PDF View

Or

Katha Chhilo Kal Sararat

কোমা – মমি

পৃথিবীর সব আলো নিভে গেলে –
ধুসর পান্ডুর চোখ করে আয়োজন
জনান্তিকে কালরাত্রি –
পাতায় পাতায় হিস্ হিস্ শব্দ ৷৷
তবু মৃত্যু ছেড়ে মরতে চাই না বড় …
ধ্বংসস্তুপে কোমার মত ৷৷
পিরামিড কর’ আয়োজন –
রক্তলেখা লিখে যাব’ আমি
মিঠেপানি নদীটির তীরে ৷৷
জমাট রক্তের মত
একদিন বেঁচেছিলে যখন
জীবনের ক্লেদাক্তও লাল হয়ে যেত ৷৷
কোনোদিন আর ঘুম ভাঙবে না জেনে
সেই ক্লেদাক্ত পাললিক মমি
                        রক্তলেখায় …..
            লিখে যাব আমি ৷৷
Or

ধৃষ্টতার হাতুড়ি

এক ছটাক মদ নিয়ে
মাতলামির অন্ত নেই আমার…..
ভাবি কয়েক হাজার বছর ধরে
একতাল কাদা, বার্নিশ
হাতে মুখে ঠোঁটে ঘষে
অবশেষে পাথুরে প্রতিমা ,
…..    এটাই সত্যি ৷

নায়েগ্রার মুখের মতো ধোঁয়াশা,
হিমালয়ের বুকের মতো – বিচূর্ণ
অথবা ব্যারেনের অগ্নিগর্ভ
হৃদয় থেকে তুলে আনা
একতাল উত্তপ্ত লাভা ৷
আমি নাভিতে যোনিতে চুমু দিয়ে দেখি
রাত শেষ হয়ে গেছে –
ভোরের ঝিমুনিটুকু বাকি ৷

সকালে চোখ ঘষে বুঝি
নিজের সত্তা নিয়েই
ধৃষ্টতার অন্ত নেই আমার ৷

In PDF View

Or

dhristatar haturi